টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় রাস্তার কাজ না করে এলজিইডির প্রকৌশলীর যোগসাজশে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। রবিবার সকালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টাঙ্গাইল জেলা শাখার উপ-সহকারী পরিচালক বাসেদ আলী এই ঘটনায় বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেছেন।
টাঙ্গাইল জেলার এলজিইডির প্রাক্তন নির্বাহী প্রকৌশলী এবং বর্তমানে প্রধান কার্যালয়ের মনিটরিং ও মূল্যায়ন শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, নাগরপুর উপজেলার প্রাক্তন প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, নাগরপুরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম, মেসার্স ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী শহীদুর রহমান খান এবং মেসার্স সৈয়দ মুজিবুর রহমানকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
দুদকের মামলায় বলা হয়েছে যে ঠিকাদার, এলজিইডি কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে কাজ শেষ না করেই ৫২,৫৯,১০৭ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
জানা গেছে, নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা ও দপ্তিয়ার ইউনিয়নে দুটি কাজ সম্পন্ন না করেই ঠিকাদার ও প্রকৌশলী উধাও হয়ে গেছেন। দুদক বিষয়টি তদন্ত করে। তদন্তে প্রাথমিকভাবে দুদক সত্যতা পায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদক মামলা করে। টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায়, এমআরআর আইডিপি প্রকল্পের আওতায়, টাঙ্গাইল শহরের পারদিঘুলিয়ার ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে এলজিইডির সাথে দপ্তিয়ার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তেবাড়িয়া রাস্তা পর্যন্ত ১,৬০০ মিটার বিটুমিন/পিচ পোয়ারিং (বিসি) এবং ৩টি বক্স কালভার্ট নির্মাণের জন্য এবং ১ বছরের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে।

বেশ কয়েকবার এসে কিছু ছোটখাটো ভুল করার পরও ঠিকাদার আর আসেননি। ঠিকাদার রাস্তার কাজ সম্পন্ন করেননি। এই কাজে তারা যোগসাজশে রাস্তার কাজ না করেই ৩১ লক্ষ ১ হাজার ৫৯১ টাকা আত্মসাৎ করেন। নাগরপুর-দেলদুয়ার উপজেলার সাবেক আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য এবং শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর বাড়ি ও মামার বাড়ি গয়হাটা ইউনিয়নে একই প্রকল্পের ৩.৬২ কিলোমিটার রাস্তার কাজ অসমাপ্ত রেখে ঠিকাদার উধাও হয়ে যায়। সৈয়দ মুজিবুর রহমান এবং অবনী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার হেকমত সিকদার ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে গয়হাটা-ভাড়া সড়কে পিচ ঢালাই (বিসি) শুরু করে ১ বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য এলজিডির সাথে ৪ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই কাজে ২১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৫১৬ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
দুদক সূত্র আরও জানিয়েছে যে প্রকল্পের কাজ আংশিকভাবে বাস্তবায়ন করে কাজের চূড়ান্ত বিল তোলার প্রাথমিক প্রমাণ রয়েছে। এছাড়াও, আংশিকভাবে বাস্তবায়িত কাজে নীচের বালির স্তর সঠিক পাওয়া গেলেও, বালির পুরুত্ব অনেক কম ছিল এবং বালির মান খারাপ ছিল। অন্য একটি প্রকল্পে আংশিক কাজ করে অবৈধভাবে অতিরিক্ত বিল পরিশোধের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ রয়েছে যে, রফিকুল ইসলাম এলজিইডির জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী থাকাকালীন ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের সাথে যোগসাজশে এই তহবিল আত্মসাৎ করেছেন। রফিকুল ইসলাম ক্ষমতার অপব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বর্তমানে রফিকুল ইসলাম এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ের মনিটরিং ও মূল্যায়ন শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। টাঙ্গাইল জেলা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নূর আলম বলেন, মামলার চার্জশিট শীঘ্রই দেওয়া হবে।