পবিত্র ঈদুল আজহার আগে বাজারে তিনটি নতুন ধরণের মুদ্রা নোট ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে, এই নোটগুলিতে কোনও ব্যক্তির ছবি থাকবে না; বরং প্রাকৃতিক দৃশ্য বা স্থাপনার ছবি থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ. মনসুর এই তথ্য জানিয়েছেন। শনিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ঋণ সক্ষমতা বৃদ্ধি কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর এই বক্তব্য দেন।

পিকেএসএফ চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিওং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আহসান এইচ. মনসুর বলেন, “আমাদের টাকা ছাপানো শুরু হয়েছে। শীঘ্রই তিনটি নোট বাজারে আসবে। এগুলো হলো ২০, ৫০ এবং ১০০০ টাকার নোট। ঈদের আগে আপনি এই নোটগুলি দেখতে পাবেন। নতুন নোটগুলিতে কোনও ব্যক্তির ছবি থাকবে না। এখানে, আমাদের প্রাকৃতিক দৃশ্য, আমাদের কিছু ঐতিহ্যবাহী ভবন, প্রাণী ইত্যাদির ছবি থাকবে।’
একজন সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন যে টাকায় মসজিদ, মন্দির এবং প্যাগোডার মতো ধর্মীয় স্থাপনার ছবি থাকবে কিনা। এই প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, ‘এমন কিছু কাঠামো থাকবে যা বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মসজিদ হোক বা মন্দির, আমরা কোনও পার্থক্য দেখতে পাচ্ছি না।’
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নোটগুলিতে দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি রয়েছে। জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিযুক্ত নোট নিয়ে বিতর্ক ছিল, তাই ১০ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক সকল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে নতুন নোট বিনিময় বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করে। এছাড়াও বলা হয়েছে যে নতুন নোট জমা করা হয়েছে ব্যাংক শাখাগুলো বিনিময় না করে সংশ্লিষ্ট শাখায় সংরক্ষণ করা উচিত। তারপর থেকে নতুন নোটের বিনিময় সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বাজারে ছেঁড়া নোট বাড়তে শুরু করে।
এদিকে, টাকশালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে নতুন ডিজাইনের নোট ছাপাতে সাধারণত এক থেকে দেড় বছর সময় লাগে। গত বছরের আগস্টে ছাত্র ও জনসাধারণের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। গত ডিসেম্বরে বাজারে নতুন ডিজাইনের নোট আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী, এই মাস থেকেই নতুন ডিজাইনের নোট ছাপানো শুরু হয়। তবে, টাকশালের একসাথে তিনটির বেশি নোট ছাপার ক্ষমতা নেই। তাই, প্রথম ধাপে ২০, ৫০ এবং ১০০০ টাকার নোট ছাপানো হচ্ছে। জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের গ্রাফিতির পাশাপাশি, আগের নকশাও নতুন নোটে ফিরে আসছে।