ইনস্ট্যান্ট মেসেজিংয়ের পাশাপাশি সহজেই কথা বলা এবং ভিডিও কল করার সুযোগ থাকায় অনেকেই নিয়মিত হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। ব্যবহারকারীর সংখ্যা এবং জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে হোয়াটসঅ্যাপে সাইবার আক্রমণের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও অজানা নম্বর থেকে ফোন কল এবং ভুয়া লিঙ্কের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর তথ্য চুরির ঘটনা ঘটেছে, এবার হ্যাকারদের একটি দল ছবির মাধ্যমে তাদের ফোনে ম্যালওয়্যার ঢুকিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করছে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, হ্যাকাররা ‘স্টেগানোগ্রাফি’ নামক একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছবিতে ম্যালওয়্যার ঢুকিয়ে পাঠাচ্ছে। স্টেগানোগ্রাফি এমন একটি প্রযুক্তি যার মাধ্যমে ছবিতে দৃশ্যমান পরিবর্তন ছাড়াই গোপনে কোড যোগ করা সম্ভব। সাধারণত, এই ধরনের কোড JPEG, PNG, MP3 বা MP4 ফর্ম্যাট ফাইলে স্থাপন করা হয়। ফলস্বরূপ, ব্যবহারকারীরা হ্যাকারদের পাঠানো ছবিগুলিকে সাধারণ ছবি ভেবে সহজেই ডাউনলোড করে। ছবিগুলি ডাউনলোড হয়ে গেলে, ব্যবহারকারীদের অজান্তেই ম্যালওয়্যার স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফোনে প্রবেশ করে। ম্যালওয়্যারটি গোপনে পাসওয়ার্ড, ওটিপি এবং অন্যান্য সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করে এবং নিয়মিত হ্যাকারদের কাছে পাঠায়, যা হ্যাকাররা ব্যবহারকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ চুরি করতে ব্যবহার করে।
সাধারণ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের পক্ষে স্টেগানোগ্রাফি-ভিত্তিক ম্যালওয়্যার সনাক্ত করা সম্ভব নয়। কারণ, এই সফটওয়্যারগুলি মূলত পরিচিত ভাইরাস বা আচরণগত অস্বাভাবিকতা খুঁজে পায়। কিন্তু ছবি বা ভিডিওর ভিতরে থাকা ক্ষতিকারক কোড সনাক্ত করা যায় না। এর জন্য উন্নত ফরেনসিক বিশ্লেষণ এবং আচরণ পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তি প্রয়োজন।
স্টেগানোগ্রাফি-ভিত্তিক ম্যালওয়্যার আক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য, সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা হোয়াটসঅ্যাপ সেটিংস থেকে মিডিয়া অটো-ডাউনলোড বিকল্পটি বন্ধ করার এবং বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা অপরিচিতদের পাঠানো ছবি ডাউনলোড না করার এবং হোয়াটসঅ্যাপে ওটিপি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং পাসওয়ার্ড তথ্য বিনিময় না করার পরামর্শ দিয়েছেন।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে