আন্তর্জাতিক ডেস্ক
এখন থেকে ভারতের আসাম রাজ্যে বহুবিবাহ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। ‘বহুবিবাহ নিষিদ্ধকরণ বিল, ২০২৫’ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিধানসভায় পাস হওয়ার ফলে তা এখন আইনে পরিনত হলো।।
প্রথম বিবাহ বিচ্ছেদ না করেই দ্বিতীয় বিয়ে করলে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে ‘বহুবিবাহ নিষিদ্ধকরণ বিল, ২০২৫’ বিলে। বিলটি ২৫ নভেম্বর ১২৬ সদস্যের বিধানসভায় পেশ করা হয়েছিল। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু-এর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
বিলটি পাসের পর আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সম্মতির জন্য বিলটি সংরক্ষণ করব। আমি মনে করি না যে বিলটি অনুমোদন থেকে বঞ্চিত হবে, কারণ রাষ্ট্রপতি একজন নারী।’ তিনি বলেন, ‘বিলটি নারীদের সুরক্ষা এবং বহুবিবাহের শিকারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে।’
আলোচনার সময় ধর্মীয় বিবরণ উদ্ধৃত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলাম সহজাতভাবে বহুবিবাহকে উৎসাহিত করে—এমন ব্যাপক বিশ্বাস বাস্তবিকভাবে ভুল। নবী মুহাম্মদ একাধিক বিবাহের প্রথা নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন এবং কঠোর শর্তে একজন পুরুষের চার স্ত্রী রাখার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। তার চিন্তাভাবনা বহুবিবাহকে উৎসাহিত করার জন্য নয় বরং বাড়াবাড়ি বন্ধ করার জন্য ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামী আইন অনুসারে প্রথম স্ত্রীর স্পষ্ট সম্মতি ছাড়া দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণ করা যায় না। সম্মতি ছাড়া, ইসলামে দ্বিতীয় বিয়ে আইনত বৈধ নয়।’ বেশ কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইতোমধ্যে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, পরবর্তী পদক্ষেপ হবে আসামে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বাস্তবায়ন। যদি তিনি আবার মুখ্যমন্ত্রী হন (২০২৬ সালের নির্বাচনের পরে), তাহলে তিনি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আনবেন। এটি সংসদের প্রতি তার অঙ্গীকার বলে জানান তিনি।
বিলে দ্বিতীয়বার বিয়ে করার আগে পূর্ববর্তী বিবাহ গোপনকারীদের ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও ভারী জরিমানার বিধান রয়েছে। বারবার অপরাধ করলে শাস্তি দ্বিগুণ হবে। বহুবিবাহের তথ্য পুলিশের কাছে গোপন করলে ২ বছরের জেল ও সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা জরিমানা। এ ধরনের বিয়ে পড়ালে ধর্মগুরু বা কাজীদেরও ২ বছর জেল ও দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
তবে ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত অঞ্চল—বোড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অঞ্চল, কার্বি আংলং স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিল ও উত্তর কাছাড় পাহাড় স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিল এবং ৩৪২ ধারার অধীনে স্বীকৃত তফসিলি উপজাতিদের ওপর এই আইন প্রযোজ্য হবে না। কিছু উপজাতির প্রচলিত আইনে বহুবিবাহের অনুমতি রয়েছে।